মনে কর তুমি স্কুলের মাঠে দাঁড়িয়ে একটি টেনিস বলকে উপরের দিকে ছুড়ে মারলে। কী দেখছ? টেনিস বলটি একটি নির্দিষ্ট উচ্চতায় উঠার পর এটি আবার নিচে নামতে থাকে। এখানে টেনিস বলটি উপরে উঠতে থাকার সময় এর গতিশক্তি কমতে থাকে এবং স্থিতিশক্তি বাড়তে থাকে। যখন এর গতিশক্তি শূন্য হয়ে যায় তখন এটি ক্ষণিকের জন্য থেমে নিচে পড়তে শুরু করে। এটি স্থিতিশক্তির কারণে নিচে নামতে থাকে। দেখা যাবে, বস্তু যতই নিচের দিকে নামতে থাকে ততই এর স্থিতিশক্তি কমে গতিশক্তি বাড়তে থাকে এবং স্থিতিশক্তি গতিশক্তিতে পরিণত হয়। টেনিস বলটি যখন মাটি স্পর্শ করে এবং স্থির হয় তখন তার সমস্ত শক্তি শব্দ, তাপ, আলোক, ইত্যাদি শক্তিতে পরিণত হয়। আমরা তাপ বা আলোকের তেমন প্রমাণ বুঝতে না পারলেও বলটি মাটিতে স্পর্শ করায় যে শব্দ উৎপন্ন হয় তা শুনতে পাই। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে টেনিস বলের পরিবর্তে একটি পাথর উপরে ছুড়ে মারলে এটি যদি কোনো মাঠে পড়ে তবে কোনো না কোনো ক্ষেত্রে পাথরটিকে ধরলে গরম অনুভূত হতে পারে।
এতক্ষণ তোমরা জেনেছ যে শক্তি কীভাবে একরূপ থেকে অন্যরূপে পরিবর্তিত হয়। তোমাদের মনে একটা প্রশ্ন জাগতেই পারে যে, এই রূপান্তরের সময় শক্তির কি কোনো অপচয় হয় না? বিস্ময়কর হলেও এটা সত্য যে শক্তির রূপান্তরের পূর্বে বা পরে মোট শক্তির পরিমাণ সমান থাকে। প্রকৃতপক্ষে আমরা কোনো নতুন শক্তি সৃষ্টি করতে পারি না, এমনকি শক্তি ধ্বংস করতেও পারি না। অর্থাৎ মহাবিশ্বের সামগ্রিক শক্তির কোনো তারতম্য ঘটে না। এই মহাবিশ্ব সৃষ্টির প্রথম মূহূর্তে যে পরিমাণ শক্তি ছিল, আজও সেই পরিমাণ শক্তি বর্তমান। এটাই হলো শক্তির নিত্যতা বা সংরক্ষণশীলতা।